সোমবার, ০২ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৮:৫৭ অপরাহ্ন
তরফ নিউজ ডেস্ক: টানা ৮০ দিন চিকিৎসা শেষে রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতাল থেকে গুলশানের বাসভবন ‘ফিরোজা’য় ফিরেছেন বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া। মঙ্গলবার রাত সাড়ে আটটায় তাকে বহনকারী গাড়ি গুলশানের বাসায় পৌঁছায়। এ সময় দলের কেন্দ্রীয় নেতারা তাকে স্বাগত জানান।
চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা আগের থেকে স্থিতিশীল আছে। করোনা পরিস্থিতি বিবেচনায় নিয়ে তাকে বাসায় রেখে চিকিৎসা দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে।
খালেদা জিয়ার বাসায় ফেরাকে কেন্দ্র করে কিছুটা হলেও উদ্বেগ কমেছে নেতাকর্মীদের। দলীয় প্রধানকে একনজর দেখতে হাসপাতাল ও গুলশানের বাসার সামনে নেতাকর্মীরা ভিড় করেছেন।
তবে চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, সাবেক এই প্রধানমন্ত্রীর শারীরিক অবস্থা অপরিবর্তিত থাকবে কি না সেটা নিশ্চিতভাবে বলা যাচ্ছে না।
২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতির মামলায় সাজা হলে কারাগারে যেতে হয় সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়াকে। পরে জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলাতেও তার সাজার রায় আসে।
দেশে করোনাভাইরাস মহামারি শুরুর পর খালেদার পরিবারের আবেদনে তাকে ২০২০ সালের ২৫ মার্চ নির্বাহী আদেশে সাময়িক মুক্তি দেয় সরকার। তবে তাতে শর্ত ছিল, তাকে দেশেই থাকতে হবে।
কারাগার থেকে বেরিয়ে খালেদা জিয়া ওঠেন গুলশানের বাসা ফিরোজায়। এরপর করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হলে গত বছরের মাঝামাঝি সময়ে তিনি প্রায় দুই মাস হাসপাতালে থাকেন। এরপর আরও দুই দফা তাকে হাসপাতালে যেতে হয়।
৭৬ বছর বয়সী সাবেক এই প্রধানমন্ত্রী বহু বছর ধরে আর্থ্রাইটিস, ডায়াবেটিস, কিডনি, ফুসফুস, চোখের সমস্যাসহ নানা জটিলতায় ভুগছেন।
সবশেষ গত ১৩ নভেম্বর ঢাকার এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার পর তার ‘পরিপাকতন্ত্রে’ রক্তক্ষরণ এবং লিভার সিরোসিসের কথা জানান চিকিৎসকরা।
বাংলাদেশে খালেদা জিয়ার ‘সুচিকিৎসার ব্যবস্থা নেই’ দাবি করে তাকে বিদেশে পাঠানোর জন্য কয়েক দফা আবেদন করেছিলেন তার ভাই। সাময়িক মুক্তির শর্তের বিষয়টি উল্লেখ করে প্রতিবারই তা নাকচ করা হয়।
এবার লিভার সিরোসিস ধরা পড়ায় খালেদাকে বিদেশে নেওয়ার অনুমতি চেয়ে পরিবারের পক্ষ থেকে আবারও সরকারের কাছে আবেদন করা হয়। তবে এবারও একই যুক্তিতে তা নাকচ করে বলা হয়, খালেদা জিয়াকে অনুমতি দেওয়ার ‘আইনি সুযোগ নেই’।
এভার কেয়ার হাসপাতালে অধ্যাপক শাহাবুদ্দিন তালুকদারের তত্ত্বাবধানে খালেদা জিয়ার চিকিৎসা চলে। গত ১০ জানুয়ারি তাকে সিসিইউ থেকে কেবিনে স্থানান্তর করা হয়।
খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা নিয়ে তার ব্যক্তিগত চিকিৎসক ডা. এজেডএম জাহিদ হোসেন বলেছেন, ‘ম্যাডাম সুস্থ হননি। উনার যে রক্তক্ষরণ হতো, সেটা এখন আপাতত বন্ধ আছে। তবে চিকিৎসক বোর্ডের আশঙ্কা, যেকোনো সময় তার অবনতি হতে পারে। ম্যাডামের সর্বোত্তম চিকিৎসা এখানে দেওয়া হলেও তার রোগের উন্নত চিকিৎসা এখানে নেই।’